আয়তনে বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ কোনটি?

মুসলিম বিশ্ব এবং ইসলামী বিশ্ব শব্দগুলি সাধারণত ইসলামী সম্প্রদায়কে বোঝায় , যা উম্মাহ নামেও পরিচিত । এটি তাদের সকলকে নিয়ে গঠিত যারা ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাস, রাজনীতি এবং আইন মেনে চলে  বা যে সমাজে ইসলাম চর্চা করা হয়। একটি আধুনিক ভূ-রাজনৈতিক অর্থে, এই পদগুলি সেসব দেশকে বোঝায় যেখানে ইসলাম ব্যাপক , যদিও অন্তর্ভুক্তির জন্য কোনো সম্মত মানদণ্ড নেই।  মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ শব্দটি একটি বিকল্প যা প্রায়ই পরবর্তী অর্থে ব্যবহৃত হয়। 

মুসলিম বিশ্বের ইতিহাস প্রায় 1,400 বছর বিস্তৃত এবং ইসলামের স্বর্ণযুগে বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি কলা, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, দর্শন, আইন, অর্থনীতি এবং প্রযুক্তির অগ্রগতি অন্তর্ভুক্ত করে । মুসলমানরা কুরআনের দিকনির্দেশনা খোঁজে এবং ইসলামিক নবী মুহাম্মদের ভবিষ্যদ্বাণীমূলক মিশনে বিশ্বাস করে , কিন্তু অন্যান্য বিষয়ে মতবিরোধ ইসলামের মধ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় বিদ্যালয় ও সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটায় ।  ইসলামিক বিজয়গুলি , যা তিনটি মহাদেশ ( এশিয়া , আফ্রিকা এবং ইউরোপ ) জুড়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় চূড়ান্ত হয়েছিল , মুসলিম বিশ্বকে সমৃদ্ধ করেছিল, ইসলামী শিক্ষার উপর জোর দেওয়ার কারণে এই প্রতিষ্ঠানের উত্থানের জন্য অর্থনৈতিক পূর্বশর্তগুলি অর্জন করেছিল। আধুনিক যুগে, অধিকাংশ মুসলিম বিশ্বের ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক আধিপত্যের অধীনে চলে আসে । উত্তর-ঔপনিবেশিক যুগে আবির্ভূত রাষ্ট্রগুলি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মডেল গ্রহণ করেছে এবং তারা ধর্মনিরপেক্ষ এবং সেইসাথে ধর্মীয় প্রবণতা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। 

2013 সালের হিসাবে , 50টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সম্মিলিত জিডিপি (নামমাত্র) ছিল US$5.7 ট্রিলিয়ন।  2016 সালের হিসাবে , তারা বিশ্বের মোটের 8% অবদান রেখেছে। ^{2020 সালে} , 57টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশনের অর্থনীতির সম্মিলিত জিডিপি (পিপিপি) ছিল 24 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বিশ্বের জিডিপির প্রায় 18% বা 5 ওআইসি সহ 30 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান ^। পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র যা বিশ্বের জিডিপির প্রায় 22% এর সমান। কিছু OIC সদস্য দেশ - আইভরি কোস্ট , গায়ানা , গ্যাবন , মোজাম্বিক , নাইজেরিয়া , সুরিনাম , টোগো এবং উগান্ডা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়। 

2020 সাদক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় 40% ,দক্ষিণ এশিয়ায় 31% , 30% সাব-সাহারান আফ্রিকায় ,  25% এশিয়ায় , 1.4% ওশেনিয়ায় , 6% ইউরোপে ,এবং আমেরিকায় 1% । 

অধিকাংশ মুসলিম দুটি সম্প্রদায়ের একটি : সুন্নি ইসলাম (87-90%) এবং শিয়া (10-13%)। যাইহোক, অন্যান্য সম্প্রদায় পকেটে বিদ্যমান, যেমন ইবাদি (প্রাথমিকভাবে ওমানে )। যে সমস্ত মুসলিমদের অন্তর্গত নয়, স্ব-পরিচয় দেয় না বা শনাক্তযোগ্য ইসলামিক স্কুল এবং শাখাগুলির মধ্যে একটির অধীনে সহজেই শ্রেণীবদ্ধ করা যায় না তারা অ-সাম্প্রদায়িক মুসলিম হিসাবে পরিচিত । মুসলমানদের প্রায় 13% বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়াতে বাস করে; ৩১% মুসলমান দক্ষিণ এশিয়ায় বাস করে, বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যা মুসলমান; 20% মধ্যপ্রাচ্য-উত্তর আফ্রিকায়, যেখানে এটি প্রভাবশালী ধর্ম; এবং ১৫% সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং পশ্চিম আফ্রিকায় (প্রাথমিকভাবে নাইজেরিয়ায় )। মুসলমানরা মধ্য এশিয়ার অপ্রতিরোধ্য সংখ্যাগরিষ্ঠ, ককেশাসে সংখ্যাগরিষ্ঠ ,এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্যাপক। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলির বাইরে ভারতে সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে। পাকিস্তান , বাংলাদেশ , ইরান এবং মিশর হল যথাক্রমে বিশ্বের দ্বিতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ এবং সপ্তম বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার আবাসস্থল। আমেরিকা , রাশিয়া , ভারত , চীন এবং ইউরোপেও বিশাল মুসলিম সম্প্রদায় পাওয়া যায় । উচ্চ জন্মহারের কারণে আংশিকভাবে ইসলাম হল বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান ধর্ম ^, একই গবেষণা অনুসারে, মুসলিম জনসংখ্যার উপর ধর্মীয় পরিবর্তনের কোন প্রভাব নেই, যেহেতু ইসলাম গ্রহণকারী এবং যারা ইসলাম ত্যাগ করে তাদের সংখ্যামোটামুটি সমান। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলির বাইরে চীনে তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে, যেখানে রাশিয়া পঞ্চম বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে। আফ্রিকার সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যা নাইজেরিয়ায়, আর ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে।

সোর্সঃ উইকিপিডিয়া